গোলাপী হ্রদ

প্রকৃতি ও মানবমনের সম্পর্ক চিরদিনের। প্রকৃতির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য মানবমানকে সবসময়ই আলোড়িত করে। চোখজুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোন স্হানের সংস্পর্শে মানবহৃদয় আবিষ্ট হয় গভীর ভালোলাগার অনুভূতিতে। আশ্চর্য এক প্রশান্তিতে ছেয়ে যায় মন। প্রকৃতির এই রূপ সৌন্দর্য একেক জায়গায় একেক রকম। বিস্তৃত গভীর নীল জলরাশির বিশালতা থেকে অরণ্যের সবুজ সতেজতা সবই আমাদের মন কাড়ে। প্রকৃতি প্রেমের অজস্র উদাহরণ আমরা দেখতে পাই গল্প, উপন্যাস, কাব্যে বা গানে।

পৃথিবী বিখ্যাত হ্রদগুলোর মাঝে রয়েছে -লবণাক্ত পানির হ্রদ কাস্পিয়ান সাগর, সুপেয় পানির হ্রদ লেক সুপিরীয়র, উচ্চতম হ্রদ টিকিটাকা বা গভীরতম হ্রদ বৈকাল। পৃথিবীর বেশিরভাগ হ্রদই অবস্থিত উত্তর গোলার্ধে। হ্রদের জন্য বিখ্যাত হাজার হ্রদের দেশ ফিনল্যান্ড। এছাড়া প্রাকৃতিক হ্রদের এক বিশাল সমাহার রয়েছে কানাডা এবং সাইবেরিয়ায়।

সাইবেরিয়া নামটা শুনলে আমাদের চোখে যে চিত্রটি ভেসে ওঠে তা হচ্ছে -বরফঢাকা বিস্তৃত একটা অঞ্চল যেখানে রোদের চিহ্নও খুঁজে পাওয়া যায় না। সবসময় তুষার পড়ে,সবমিলিয়ে বরফের এক বিশাল সাম্রাজ্য। বাস্তবতা হল রাশিয়ার এই উত্তরাঞ্চলটিতে গ্রীষ্মমন্ডলীয় অন্যান্য অঞ্চলের মতোই প্রখর রোদ্দুর পড়তে দেখা যায়। তখন এই অঞ্চলের বিচিত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য পর্যটকের ভীড়ও বেড়ে যায়।

সাইবেরিয়ার একটি বিশেষ হ্রদ হচ্ছে বার্লিনস্কয়ি। এই হ্রদটিকে সাইবেরিয়ার অন্যান্য হ্রদ থেকে আলাদা করেছে এর একটি চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য। তা হচ্ছে -গ্রীষ্মকালে এই হ্রদটি গোলাপী বর্ণ ধারণ করে। আশ্চর্য হচ্ছেন? ভাবছেন হ্রদের রঙ গোলাপী হয় কিভাবে? নিশ্চয়ই লেখকের মাথা খারাপ। না,আমার মাথা ঠিকই আছে। হ্রদটার বৈশিষ্ট্যই আশ্চর্যজনক। বছরের অন্যান্য সময়ে হ্রদটির রঙ আর দশটা হ্রদের মতোই থাকে। হ্রদের রঙ কেমন হবে তা মূলত আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে। আকাশে মেঘের আনাগোনাও হ্রদের রঙ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে।

আবহাওয়া মেঘলা হলে হ্রদের রঙ হয় গাঢ় ধূসর। আর আকাশ নীল হলে হ্রদও নীল। কিন্তু গ্রীষ্মকালে হ্রদটির রঙ নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয় গোলাপীতে।
কেন? চলুন জানা যাক। দ্য সাইবেরিয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের বার্লিনস্কয়ি লেকখানি অতিরিক্ত লবণাক্ত। লেকটি পশ্চিম সাইবেরিয়ার বৃহত্তম লবণের উৎস। বার্লিনস্কয়ি থেকে তৈরী খাবার লবণেরও রয়েছে এক ব্যতিক্রমী গল্প। বার্লিনস্কয়ির লবণের সাথে জড়িয়ে আছে রাশিয়ান রাজ পরিবারের স্মৃতি। রাশিয়ার বিখ্যাত রাণী ক্যাথেরিন দ্য গ্রেটের প্রিয় লবণ ছিল এই বার্লিনস্কয়ির লবণ। তার ডিনার টেবিলে শোভা পেত এই লবণটিই।

লেক বার্লিনস্কয়ির গোলাপী হওয়ার একমাত্র কারণ এর লবণাক্ততা নয়। আরেকটি উল্লৈখযোগ্য কারণ হচ্ছে এক ধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চিংড়ী জাতীয় জীব। এর নাম হচ্ছে লেকের উষ্ম আবহাওয়া এবং লবণের আধিক্য এই তিনচোখো, বাইশপদী চিংড়ীর বসবাসের জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করে। এরা সাধারণত আগষ্ট মাসে দলবেধে বার্লিনস্কয়িতে আসে। এইজন্যই মূলত লেকটি হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ফ্লেমিঙ্গো-গোলাপী বর্ণের। সাইবেরিয়ান টাইমস অনুযায়ী, অত্যধিক গরমের কারণে লেকটি কাঙ্ক্ষিত সময়ের কয়েক সপ্তাহ আগেই গোলাপী বর্ণে রূপ নিয়েছে।

আরেকটি বিস্ময়কর সত্য হচ্ছে বার্লিনস্কয়িই পৃথিবীতে একমাত্র গোলাপী হ্রদ নয়। পৃথিবীর প্রায় সব মহাদেশেই গোলাপী হ্রদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাদের গোলাপী হওয়ার কারণেও আছে বৈচিত্র্য। মেক্সিকোর জুকাটন উপদ্বীপের একটি গোলাপী হ্রদের পেছনেও কারণ এই চিংড়িগুলো। একই কারণে গোলাপী বর্ণ ধারণ করে পশ্চিম অস্ট্রলিয়ার এপোনিমাস লেকও। হ্রদগুলোর গোলাপী হওয়ার পেছনে আরেকটি কারণ হচ্ছে লবণপ্রেমী এক ধরনের শৈবাল। অতিক্ষুদ্র সবুজ বর্ণের এই শৈবালগুলো ক্যারোটিনয়েডস তৈরী করে। এরা এন্টি অক্সিডেন্ট হওয়ায় পানিতে এদের উপস্থিতি ক্ষতিকর নয়। হ্রদের অতিরিক্ত লবণাক্ত পরিবেশে টিকে থাকতে এই শৈবালগুলো উচ্চ পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন ধারণ করে। বিটা ক্যারোটিন রঙিন কসমেটিকস তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। ভিটামিন এ যুক্ত লাল ও কমলা শাকসব্জির রঙিন হওয়ার কারণও বিটা ক্যারোটিন।



চলুন এবার জানা যাক পৃথিবীবিখ্যাত আরো কিছু গোলাপী হ্রদের কথা।

লেক হিলার: লেক হিলার আবিষ্কারের পেছনে রয়েছে এক রোমাঞ্চকর গল্প। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ উপকূলজুড়ে একসারি দ্বীপ আছে। একে বলা হয় রিকার্চি দ্বীপপুঞ্জ। রিকার্চি দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড় দ্বীপটির নাম হল মিডল আইল্যান্ড। জনবসতিহীন এই দ্বীপটি ইউক্যালিপটাসের ঘন বনে আচ্ছাদিত। গাছগাছালিতে ছাওয়া একটি সরু বেলাভূমি নীল দক্ষিণ মহাসাগর থেকে একে আলাদা করেছে। একদিন মিডল আইল্যান্ডে নোঙ্গর করল একটি জাহাজ। জাহাজটির ক্যাপ্টেন ম্যাথু ফ্লিন্ডারস ছিলেন একজন ইংরেজ অভিযাত্রী। ক্যাপ্টেন দ্বীপটি ঘুরে দেখার উদ্দ্যেশ্যে জাহাজ থেকে তীরে নামলেন।

ঘুরতে ঘুরতে তার চোখে পড়ে দ্বীপের সবচেয়ে উঁচু পর্বতটি। তিনি কৌতুহলবশত পর্বতের চূড়ায় উঠেন। পর্বতের চূড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে তাকিয়ে তিনি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যান গোলাপ রঙা ছোট একটি লেক দেখে। ফ্লিন্ডারস এই লেকের নামকরণ করেন একজন ক্রুর নামে যিনি মিডল আইল্যান্ডে থাকাকালীন ডায়রিয়ায় মারা যান। ফ্লিন্ডারস আবিষ্কার করলেন গোলাপী এই লেকটি ডেড সীর মতোই লবণাক্ত। তারা লেকের তীর থেকে জাহাজভর্তি লবণ নিয়ে দেশে ফেরেন। এছাড়া লেকে লবণপ্রিয় কিছু আর্কিব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিও লেক হিলারকে বাবল গামের মতো গোলাপী করে তুলেছে।

লেক হিলারের এই গোলাপী রঙ স্থায়ী। কখনো এই রঙ পরিবর্তিত হয়না। হিলারের পানি গোলাপী হলেও স্বচ্ছ। গ্লাসে নেয়া হলেও লেক হিলারের পানি গোলাপীই থাকে। এই গোলাপী পানিটি একেবারেই বিষাক্ত নয়। তবে অবশ্যই অত্যধিক লবণাক্ত। তাই খেতে পারবেন না। লেক রেটবা: সেনেগালের উপকূলে অবস্থিত লেক রেটবা আরেকটি বিশ্ববিখ্যাত গোলাপী হ্রদ। এই লেকটিও অত্যধিক লবণাক্ত। লেক রেটবায় গেলে দেখা যায় লেক থেকে লবণ তুলতে ব্যস্ত লবণচাষীদের।

আর লেকের তীরে তাদের সংগৃহীত লবণের স্তূপ। অতিরিক্ত লবণ যেন ত্বকের ক্ষতি না করে সেজন্য এই লবণচাষীদেরদের লবণ তুলতে যাওয়ার আগে শরীরে শিয়া বাটার মেখে নিতে হয়। লেক রেটবার গোলাপী হওয়ার জন্যও দায়ী শৈবালটি। শুকনো মৌসুমে লেক রেটবার গোলাপী রঙ উজ্জ্বল হয়। আর বর্ষার মৌসুমে গোলাপী রঙ ফিকে হয়ে আসে।

লেক রেটবার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে অভিভূত করবে। লেকের তীরে লবণের পাহাড়, লেকের গোলাপি জলরাশি এবং লেকের অন্যপাড়ের সোনালি বালুকাবেলা এক অপূর্ব সৌন্দর্যের দ্যোতনা করে। পিঙ্ক লেক: পিঙ্ক লেক পশ্চিম অস্ট্রলিয়ার গোল্ডফিল্ডস-এসপেরেন্স অঞ্চলে অবস্থিত একটি বিখ্যাত লেক। এই লেকটিও লবণাক্ত এবং গোলাপি বর্ণের। তবে এর গোলাপী বর্ণ সবসময় থাকে না। যখন লেকের লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে যায়,তাপমাত্রা উচ্চ হয়,যথেষ্ট আলো থাকে,তখনই শৈবাল বিটা ক্যারোটিন সংশ্লেষ করে। ফলে তার লাল রঙ ছড়াতে থাকে লেকে লেকের তলদেশে জন্মানো লবণখেকো ব্যাকটেরিয়া, লবণপ্রেমী চিংড়ি এবং শৈবালের ভারসাম্যপূর্ণ উপস্থিতি লেকটিকে গোলাপী করে তোলে। লেকটিতে দেখা মেলে নানা জাতের পাখির। এটি একটি গুরুত্বপূ্ণ পক্ষী অভয়ারণ্য।

লাস স্যালাইনাস দ্য টরিভিজা: কল্পনা করুন, আপনি গোলাপী পানিতে অবগাহন করে আছেন আর আশেপাশে উড়াউড়ি করছে গোলাপী ফ্ল্যামিঙ্গোর ঝাঁক। অবাস্তব দৃশ্য মনে হচ্ছে,তাই না? কিন্তু কখনো কখনো বাস্তব কল্পনাকেও হার মানায়। স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অবস্থিত গোলাপী হ্রদ লাস স্যালাইনাস দ্য টরিভিজা এরকমই কিছু। এটি ভ্যালেন্সিয়ার অন্যতম মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিকসৌন্দর্যমন্ডিত স্থান। অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে লেকটির আশেপাশে গাছপালা খুব একটা দেখা যায়না। তারপরও অদ্ভুত কিছু উদ্ভিদ জন্মায়। ফুলের মৌসুমে লাস স্যালাইনাসে স্যালাডিলাস (ল্যাভেন্ডার) এবং বিরল ধরনের প্রস্ফুটিত অর্কিডের দেখাও মিলতে পারে। লেকটির দক্ষিণে লবণাক্ততা অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় সেখানে স্বাভাবিক ভূমধ্যসাগরীয় গাছপালা যেমন -পাইন, ইউক্যালিপটাস প্রভৃতি জন্মাতে দেখা যায়।

তবে লাস স্যালাইনাসের সত্যিকার সেলিব্রেটি হচ্ছে আর্কিব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য গোলাপী হ্রদের মতোই এদের উপস্থিতিই লেকটিকে গোলাপী করে তোলে। উচ্চ লবণাক্ততা এবং এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবের উপস্থিতির কারণে লেক থেকে উগ্র কটু গন্ধ বের হয়। স্বপ্নটা সত্যি হয়ে যসয় যখন লেকটিতে ফ্ল্যামিঙ্গোরা আসে। ফ্ল্যামিঙ্গোদের গোলাপী রঙ লেকের গোলাপী রঙের সাথে মিলেমিশে এক অপার্থিব সৌন্দর্য্য সৃষ্টি করে। লেকটিতে হরেক রকম অতিথি পাখির আনাগোনাও দেখা যায়। লেকের জলে অল্প পরিমাণ লবণপ্রেমী চিংড়ীও পাওয়া যায়।

ডাস্টি রোজ লেক: এটি কানডার বিট্রিশ কলাম্বিয়ায় অবস্থিত একটি গোলাপী হ্রদ। এই হ্রদটি অন্যান্য গোলাপী হ্রদ থেকে আলাদা। অন্যান্য হ্রদগুলো লবণাক্ত এবং বিশেষ ধরনের শৈবালের উপস্থিতির জন্য গোলাপী হয়। কিন্তু ডাস্টি রোজ একট সুপেয় পানির হ্রদ এবং এতে কোন শৈবালও নেই। উঁচু পর্বতপৃষ্ঠে অবস্থিত এই লেকটি হিমবাহ থেকে সৃষ্টি। আর এর গোলাপী রঙ সম্ভবত এসেছে লেকটির তলদেশে থাকা বিচিত্র রঙের পাথরের কারণে।

শ্যাম্পেন পুল : এই লেকটি নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত। লেকটির দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য আপনার মন কেড়ে নেবেই। লেকটিতে প্রচুর পরিমাণে নানারকম ধাতুর আকরিক আছে। এগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়। গ্লাসে শ্যাম্পেন ঢাললে যেমন বুদবুদ ভেসে ওঠে, লেকটিতে তেমনি ধোঁয়ার মতো কার্বন ডাই অক্সাইডের বুদবুদ ভেসে ওঠে। এজন্যই লেকটির নাম রাখা হয়েছে শ্যাম্পেন পুল। লেকটির পানির রঙেও আছে বৈচিত্র্য। কোথাও পানি সবুজ রঙের তো কোথাও হলুদ। লেকটি সবচেয়ে সুন্দর দেখায় সূর্যাস্তের সময়। অস্তমিত সূর্যের আলোয় পুরো লেকটি হয়ে ওঠে কমলা রঙের যা এক শ্বাসরূদ্ধকর সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে।

লেগুনা কলরাডো : এটি বলিভিয়ায় অবস্থিত একটি অনন্যসাধারণ লেক। উচ্চ পরিমাণ বোরাক্স,লাল রঙের খনিজ এবং শৈবালের উপস্থিতির কারণে লেকটির রঙ হয় গাঢ় লাল থেকে গোলাপী। লেকটিতে ফ্ল্যামিঙ্গোরও দেখা মেলে।

মাসাজির লেক: এই লেকটি আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে থেকে একটু দূরে মাসাজির শহরের নিকট অবস্থিত। মাসাজির লেককটি লাল রঙের। এই লাল রঙের কারণ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অকোষীয় লবণখেকো কিছু জীব। মাসাজির লেক থেকে লবণ সংগ্রহ করা হয়। এই লবণ শোভা পায় স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোতেও। গ্রীষ্মের প্রখর রোদতপ্ত দুপুরে লেকটি সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখায়।

লবণখেকো এইসব জীবদের আমাদের ধন্যবাদ দেয়া উচিত এরকম অনন্যসাধারণ গোলাপী হ্রদ উপহার দেয়ার জন্য। নিঃসন্দেহে গোলাপী রঙা হ্রদ প্রকৃতির বৈচিত্যময় সৌন্দর্যের একটি অভিনব অংশ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url