বসন্ত উৎসব শান্তিনিকেতন

শান্তিনিকেতনে দোলোৎসবই বসন্ত উৎসব বলে প্রচলিত। ফাগুন মাস বসন্তকাল, এবং দোল অর্থাৎ হোলিখেলা এই মাসেরই অঙ্গ। জাতিধর্ম নির্বিশেষে আমরা প্রায় প্রত্যেকেই সামিল হই এই উৎসবে। এই বিশেষ উৎসব শান্তিনিকেতনে এক নতুন মাত্রায় মাত্রা পায়। দোলের সাতদিন আগে থেকে সাজো সাজো রব পরে যায় শান্তিনিকেতনে বীরভূম জেলায়। সাধারণত ভুবন মাঠেই এই উৎসব পালিত হয়।

বিরাট মঞ্চ বাঁধা হয় মাঝখানে এবং বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা তৈরী হয় মূল মঞ্চে পৌঁছানোর। কলাকুশলীরা অর্থাৎ বিশ্বভারতীর ক্ষুদে ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে বড়রা সামিল হয় এই উৎসবে। শাড়ি পরিহিত সুন্দর সাজ তাদের। মেয়েরা হলুদ ও সবুজ রঙের শাড়ি পরে, গলায় উত্তরীয়, চুলে বা খোঁপায় পলাশ ফুল, কপালে চন্দনের টিপ্। ছেলেরা পরনে রঙিন ধুতি, পাঞ্জাবি, গলায় উত্তরীয়। যেটা শান্তিনিকেতনের প্রাচীন ঐতিহ্য।



অনুষ্ঠান শুরু হয়, ছোট শিশুদের নাচ দিয়ে। নাচতে নাচতে তারা মঞ্চের দিকে ঢুকে যায়। তারপরে এক এক করে আস্তে থাকে নাচের দল। নাচের সাথে সাথে কবি গুরুর গান ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল, লাগলো যে দোল।

দূর থেকে দেখলে মনে হবে, যেন রঙের স্রোত বয়ে চলেছে এমনই নাচের ছন্দ, এমনই নৃত্য সুষমা। আবার কেহ ডান্ডি নাচছে, কেউ বা রবীন্দ্রীক, কেউ মনিপুরী। কারণ সর্ব ভারতীয় মিলন ক্ষেত্র এই শান্তিনিকেতন। কবিগুরু তো চেয়েছিলেন, ছেলেমেয়েরা সব কিছুতেই পারদর্শী হয়ে উঠুক। সকাল সাতটায় শুরু হয় এই অনুষ্ঠান। সবশেষে আবীর ছড়াতে ছড়াতে সবাই এক হয়ে যায়। সে দৃশ দেখে মনে হয়, এক স্বর্গীয় সুন্দর্য।

সন্ধাবেলায় এখানেই নৃত্যনাট্য হয়। সেও এক সুন্দর মনোরঞ্জন অনুষ্ঠান। কোথাও কোথাও বাউলদের গান শোনা যায়। তাঁরাও এই উৎসবেরই এক অঙ্গ। তাঁদের গানে বোলপুরের আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে। চারিদিকে আলোর রোশনাই, সে এক জমজমাট হৈ হৈ রব পরে যায় বোলপুরের শান্তিনিকেতনে।







Next Post Previous Post
1 Comments
  • Valladolid Daily Photo
    Valladolid Daily Photo ১০ মার্চ, ২০১২ এ ৫:২৬ PM

    Very colorful!

Add Comment
comment url