টাটা সাম্রাজ্যের ইতিহাস
বাবাকে বলে গিয়েছিলেন, প্রাচ্যদেশে ব্যবসা করতে যাচ্ছেন, সেখান থেকে মোটা উপার্জন ছাড়া বাড়ি ফিরবেন না। তাঁর সেই সদ্য সংসার হয়েছে। বিয়ের পরেই এমন কঠিন সিদ্ধান্তে বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্ত্রীও। কিন্তু চোখে মুখে সেই পার্সি যুবকের তখন স্বপ্নের হাতছানি। বড় ব্যবসায়ী হতে তাঁকে হবেই। বাবার কাছে এক হাজার টাকা নিয়ে বেড়িয়ে পড়লেন স্বপ্ন সন্ধানে।
পথে ঘাটে পরাধীন ভারতের দৈন্যতা তাঁকে বিস্তর বিচলিত করেছে। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য অন্য। তিনি সওদাগর। একে একে গুজরাট, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, বাংলা হয়ে সমগ্র পূর্ব ভারত এমনকি ব্রহ্মদেশও চষে ফেললেন তিনি। কিন্তু কই! উপার্জন তো দূরে থাক, তাঁর সমস্ত সঞ্চয়ই প্রায় শেষ হয়ে আসছিল। কেউ অপরিচিত এই পার্সি যুবকের সঙ্গে বাণিজ্যে আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না। উল্টে তাঁকে নির্মমভাবে ঠকাচ্ছিলেন অনেকে। ক্লান্ত, পর্যদুস্ত এই মানুষটির এইভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। মাঝে মধ্যে বাবাকে চিঠি লিখে জানাতেন। বাবা বলতেন ফিরে আসতে। আর প্রতিবারই তিনি উত্তর দিতেন, একবার শেষ চেষ্টা করে দেখি!
এভাবে 'চেষ্টা' করা অবশ্য কোনো কাজে আসেনি। প্রায় দুই বছর পার হয়েছে এই করে। সঞ্চয়ে মাত্র তিনটাকা ছয় আনা। স্থির করলেন, আর নয়। এবার ফিরে যেতে হবে। কোলকাতার এক স্টিমারে চাপলেন। অপরাহ্ন গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। চারদিকে একটা ঘোলাটে থমথমে ভাব। স্টিমার তখন মাঝ গঙ্গায়। যাত্রী কেবল দুই জন। এক সন্ন্যাসী এবং সেই পার্সি যুবক। হতাশায় ডুবে থাকা যুবকটি সেই সৌম্য সন্ন্যাসীকে দেখে তৃপ্ত হলেন।
তাঁর কাছে গিয়ে বসলেন খানিক। সন্ন্যাসী স্মিত হেসে বললেন, "কিছু খেয়েছ?"। এভাবেই কথা শুরু হলো তাঁদের। নামবার আগে যুবকটি জিজ্ঞেস করল, সে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। সন্ন্যাসী বললেন, যেও। তবে তার আগে বিহার দেশে আরেকবার চেষ্টা করে যেও। নাহলে ভারতের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে যে!
সন্ন্যাসী চলে গেলেন। কপর্দক শুন্য মানুষটা কোথা থেকে যেন বিরাট উদ্দম পেলেন। অগ্র পশ্চাৎ বিবেচনা না করেই চলে গেলেন বিহারে। সন্ন্যাসীর কথা মতো শুরু করলেন লোহার কারবার। বাকিটা ইতিহাস। সেদিনের সেই পার্সি যুবক ছিলেন বর্তমান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টিল উৎপাদনকারী সংস্থা টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানির প্রাণ পুরুষ স্যার জামসেদজী টাটা। আর সেই সৌম্য সন্ন্যাসী ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ।
পথে ঘাটে পরাধীন ভারতের দৈন্যতা তাঁকে বিস্তর বিচলিত করেছে। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য অন্য। তিনি সওদাগর। একে একে গুজরাট, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, বাংলা হয়ে সমগ্র পূর্ব ভারত এমনকি ব্রহ্মদেশও চষে ফেললেন তিনি। কিন্তু কই! উপার্জন তো দূরে থাক, তাঁর সমস্ত সঞ্চয়ই প্রায় শেষ হয়ে আসছিল। কেউ অপরিচিত এই পার্সি যুবকের সঙ্গে বাণিজ্যে আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না। উল্টে তাঁকে নির্মমভাবে ঠকাচ্ছিলেন অনেকে। ক্লান্ত, পর্যদুস্ত এই মানুষটির এইভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। মাঝে মধ্যে বাবাকে চিঠি লিখে জানাতেন। বাবা বলতেন ফিরে আসতে। আর প্রতিবারই তিনি উত্তর দিতেন, একবার শেষ চেষ্টা করে দেখি!
এভাবে 'চেষ্টা' করা অবশ্য কোনো কাজে আসেনি। প্রায় দুই বছর পার হয়েছে এই করে। সঞ্চয়ে মাত্র তিনটাকা ছয় আনা। স্থির করলেন, আর নয়। এবার ফিরে যেতে হবে। কোলকাতার এক স্টিমারে চাপলেন। অপরাহ্ন গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। চারদিকে একটা ঘোলাটে থমথমে ভাব। স্টিমার তখন মাঝ গঙ্গায়। যাত্রী কেবল দুই জন। এক সন্ন্যাসী এবং সেই পার্সি যুবক। হতাশায় ডুবে থাকা যুবকটি সেই সৌম্য সন্ন্যাসীকে দেখে তৃপ্ত হলেন।
তাঁর কাছে গিয়ে বসলেন খানিক। সন্ন্যাসী স্মিত হেসে বললেন, "কিছু খেয়েছ?"। এভাবেই কথা শুরু হলো তাঁদের। নামবার আগে যুবকটি জিজ্ঞেস করল, সে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। সন্ন্যাসী বললেন, যেও। তবে তার আগে বিহার দেশে আরেকবার চেষ্টা করে যেও। নাহলে ভারতের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে যে!
সন্ন্যাসী চলে গেলেন। কপর্দক শুন্য মানুষটা কোথা থেকে যেন বিরাট উদ্দম পেলেন। অগ্র পশ্চাৎ বিবেচনা না করেই চলে গেলেন বিহারে। সন্ন্যাসীর কথা মতো শুরু করলেন লোহার কারবার। বাকিটা ইতিহাস। সেদিনের সেই পার্সি যুবক ছিলেন বর্তমান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টিল উৎপাদনকারী সংস্থা টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানির প্রাণ পুরুষ স্যার জামসেদজী টাটা। আর সেই সৌম্য সন্ন্যাসী ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ।