কালবৈশাখী ঝড়

প্রতি বছর আমাদের দেশে ফাল্গুন হতে জৈষ্ঠ্য মাসের ভিতরে প্রচুর কালবৈশাখী ঝড় হয়েথাকে, আসলে গ্রীষ্মকালে বর্ষা শুরুর আগে সূর্যের প্রখর তাপে আমাদের দেশের মাটি অনেক গরম হয়ে পড়ে, ও বায়ুচাপ স্থলভাগের উপর অনেক হ্রাস পায় যার ফলে বঙ্গপোসাগর থেকে দক্ষিণ পশ্চিম আদ্রো মৌসূমী বায়ু প্রচুর জলীয়বাস্প নিয়ে আমাদের দেশের উপর দিয়ে দক্ষিণ দিক হতে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়, আর ঠিক একই সময় আমাদের দেশের উপরের স্তরের একটি বাতাস পশ্চিম দিক হতে পুর্ব দিকে প্রবাহিত হয় যাতে বলাহয়ে থাকে পশ্চিমা জেট বায়ু বা পশ্চিমা শীতল শুস্ক বায়ু।

এই দুই প্রকার বায়ু পরস্পর বিপরীত দিকে চলতে থাকে, দক্ষিণ পশ্চিম আদ্রো বায়ু দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় আর ক্রমাগত উপরের দিকে উঠতে থাকে ও এক পর্যায় পশ্চিমা শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে শীতল হয়ে যায়, আমরা জানি গরম বায়ু শীতল হলে তার জলীয়বাস্প ধারন খমতা অনেক হ্রাস পায় এর ফলে ঐ বায়ু প্রচুর জলীয়বাস্প ত্যাগ করে যার ফলে ঐ দুই বায়ুর মিলনস্থলে প্রচুর ঘন কালো বজ্রপাত আলা মেঘের সৃষ্টি হয়।

এদিকে গরম বায়ু হটাৎ শীতল হয়ে যাবার ফলে আবহাওয়া তাপমাত্রা তারতম্যের প্রচুর পার্থক্য হয় ও বায়ুচাপের প্রচুর তারতম্য ঘটে, এর ফলে ঐ শীতল বায়ু খুব দ্রুত নিচে নেমে এসে ঝড়ের সৃষ্টি করে যা মূলত কালবৈশাখী ঝড় নামে পরিচিত, আসলে গরম বাতাসের সাথে কতটা শীতল বায়ুর মিলন হল তার পরিমাণের উপর নির্ভর করে ঝড়ের শক্তি স্থায়ীত্ত।



ফাল্গুন, চৈত্র, বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্য মাসে এ ঝড় হলেও বৈশাখ মাসে এ ঝড় অধিক হয় বলে এ ঝড়ের নাম কালবৈশাখী ঝড় নামে পরিচিত। পশ্চিম বাংলা এ ঝড় অধিক দেখা যায়। সাধারণত চৈত্রের শেষে এবং বৈশাখ মাসে সূর্য দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের ওপর খাড়াভাবে কিরণ দেয়। ফলে এ অঞ্চলের বায়ু সকাল থেকে দুপুরের রোদের তাপে হালকা হয়ে ওপরের দিকে উঠে যায়।

এভাবে বিকেলের দিকে এ অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এ সময় আমাদের দেশের উত্তরে ও হিমালয়ের দিকে বায়ুর চাপ বেশি থাকে। তাই উচ্চচাপের উত্তরাঞ্চল থেকে বায়ু প্রবল বেগে দক্ষিণ দিকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ধাবিত হয়। ফলে যে প্রবল ঝড়ের সৃষ্টি হয়, তাকে আমরা কালবৈশাখী ঝড় বলে থাকি।

কালবৈশাখী ঝড় কিন্তু চট করে তৈরি হয় না। কালবৈশাখীর স্থায়িত্বকাল স্বল্পতর, একটি কালবৈশাখী ঝড় তৈরি হয়ে পূর্ণতা লাভের পর ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এর তীব্রতা সর্বোচ্চ থাকে। তারপর তা আস্তে আস্তে হ্রাস পেতে থাকে। তবে কখনও কখনও এ ঝড় এক ঘন্টারও বেশিকাল স্থায়ী হয়। কালবৈশাখীর বায়ুর গড় গতিবেগ ঘন্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিমি। কোন কোনো ক্ষেত্রে এ গতিবেগ ঘন্টায় ১০০ কিমি-এর বেশিও হতে পারে।

কালবৈশাখীর সময় অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত হয়। বিদ্যুৎ চমকানো, বজ্রপাত, অতি দ্রুত হারে তাপমাত্রা হ্রাস আর শিলাপাত কালবৈশাখীর সাধারণ ঘটনা।

Next Post Previous Post
3 Comments
  • The Write Girl
    The Write Girl ১২ আগস্ট, ২০১১ এ ৯:৪১ AM

    I like the contrast and softness of gray in the sky. I hope the storms were not too severe in your area. A very nice photo!

  • Kel
    Kel ১৩ আগস্ট, ২০১১ এ ৯:১৫ AM

    there is a softness to this image which belies the stormy weather

  • Tatjana Parkacheva
    Tatjana Parkacheva ১৫ আগস্ট, ২০১১ এ ২:৪২ PM

    Very good photo.

    Regards!

Add Comment
comment url