মোবাইল ফোন আবিস্কার এবং ব্যবহারের ইতিহাস

মোবাইল ফোন, সেলফোন, মুঠোফোন বা সেলুলার ফোন যা-ই বলেননা কেন, এটা যে আমাদের জীবনের কতটা যায়গা দখল করে নিয়েছে সেটা বুঝতে পারবেন যদি একটা মাত্র দিন জিনিসটাকে হাত থেকে দূরে রাখেন। অথচ আমরা অনেকেই এর ইতিহাস সমন্ধে যথেষ্ট জানিনা। আবিস্কারকের নাম বলতে পারেন এমন লোকের সংখ্যাও দেখেছি অনেক কম। আসুন জেনে নিই মোবাইল ফোণ আবিস্কার সম্পর্কিত কিছু তথ্য। প্রথম রেডিও ফোন ধারণা উদ্ভব হয় সেই ১৯০৮ সালে, যেটাকে সেলুলার ফোনের জন্মসূত্র ধরা হয়। যদিও বাস্তবের মোবাইল ফোন এসেছে অনেক দেরিতে।

দুই বছর পর ১৯১০ সালে এরিকসন তার গাড়িতে টেলিফোন লাগিয় ফেলেন, ভ্রাম্যমান ফোন হিসেবে এটার নামই প্রথম আসে। যদিও এরিকসন-এর ফোনটা ঠিক রেডিও ফোন ছিলোনা। ভদ্রলোক তাঁর গাড়ি নিয়ে দেশময় ঘুরে বেড়াতেন এবং প্রয়োজন হলেই গাড়ি থামিয়ে ফোনের সাথে লম্বা দুইটা তার লাগিয়ে নিতেন, তারপর জাতীয় ফোন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফোন করার কাজ সারতেন! সমসাময়িক ইউরোপের ট্রেনগুলোতে প্রথম শ্রেনীর যাত্রীরা রেডিও ফোন ব্যবহারের সুযোগ পেতেন। এই সুবিধা ছিলো বার্লিন থেকে হামবুর্গ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। একই সময় বিমানের যাত্রীরা নিরাপত্তার খাতিরে রেডিও টেলিফোন সুবিধা পেতেন।



এ জাতীয় ফোনের ব্যাপক ব্যবহার হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। জার্মানী মূলত ব্যাপক প্রচলন ঘটায় । সৈন্যরা যোগাযোগের জন্যে এটাকে ব্যবহার করত। আমরা যে মোবাইল ফোন কে চিনি তার জন্ম ১৯৭৩ সালে। আজকের বিখ্যাত মোবাইল ফোন নির্মাতা কোম্পানী মটরোলার হাত ধরে যাত্রা শুরু করে সেলুলার ফোন। নাম দেওয়া হয় ডিনাটাকে ৮০০০ক্স। মজার ব্যাপার কি জানেন, এই ফোনটাতে কোনো ডিসপ্লে ছিলোনা।

১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল মটরোলার কর্মকর্তা মার্টিন কুপার বেল ল্যাবস-এর কর্মকর্তা এর সাথে বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মত মোবাইল ফোনে কথা বলেন। আর মোবাইল ফোনের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে যায় এই দুই বিজ্ঞানী, মটরোলা আর বেল ল্যাবস-এর নাম। অবশ্য রেডিও ফোন-এর আবিস্কারক হিসেবে মার্টিন কুপার আর তাঁর গুরু মটোরোলা পোর্টেবল কমিউনিকেশন প্রোডাক্টস-এর চীফ জন ফ. মিচেল নাম পেটেণ্ট-এ লিপিবদ্ধ হয় ১৭ অক্টোবর ১৯৭৩ সালে। জেনারেশন ভিত্তিক মোবাইল ফোনের ইতিহাস বেশ কয়েকটা অংশে বিভক্ত (যেমনঃ 1G, 2G, 2.5G, 2.75G, 3G, 4G ), এগুলো নিয়ে ইনশাআল্লাহ আরেকদিন আলোচনা করবো।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url