ধনতেরাস কী এবং কেন পালিত হয়?
এই তিথিকে ধন্বন্তরি ত্রয়োদশী বলে। দীপাবলি তে মাতা লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। এর পূর্বে সোনা অলঙ্কারাদি কেনাকে অত্যন্ত শুভ মানা হয়। তাই এই ধনতেরাস উৎসবে সোনা আদি অলঙ্কার কেনার ধূম দেখা যায় । ধনতেরাস উৎসবের পরদিন থাকে নরক চতুর্দশী বা ভূত চতুর্দশী। এই দিন নরকাসুর বধ হয়েছিলো ।
ধন্বন্তরী-ত্রয়োদশী বা ধনত্রয়োদশীকে ধনতেরাস বলা হয়। ধনতেরাস পালন করা হয় বিশেষত কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে। এই দিনে কিছু নতুন জিনিস কেনার রেওয়াজ রয়েছে। বিশেষ করে রুপা এবং সোনা কেনার প্রচলন রয়েছে। কারণ বিশ্বাস করা হয় এই দিনে নতুন নতুন জিনিস কিনলে ধন সম্পদ বৃদ্ধি পায়।
ধনতেরাসের দিন লক্ষ্মী ঠাকুর পূজা করা হয়। ধন্বন্তরী এই দিনে অবতার হয়েছিলেন এই কারনে এটিকে ধনতেরাস বলা হয়। সমুদ্র মন্থনের সময় সমস্ত দেবতা এবং অসুরদের দ্বারা যৌথভাবে প্রাপ্ত সম্পাদিত চৌদ্দ রত্নগুলির মধ্যে ধন্বন্তরী এবং মাতা লক্ষ্মী অন্যতম। তাই এই তারিখটি ধনত্রয়োদশী নামেও পরিচিত।
এই দিনে লক্ষ্মীর সাথে ধন্বন্তরী পূজা করা হয়। দীপাবলি ভারতের অন্যতম একটি উৎসব। দীপাবলি শুরু করা হয় ধনতেরাসের মাধ্যমে। দীপাবলির এক বা দুই দিন আগে ধনতেরাস পালিত হয়। এই দিনে লক্ষ্মী- গণেশ ও কুবের পূজা করা হয়। ধনতেরাসের দিন সোনা কেনা শুভ বলে বিবেচিত করা হয়। এই দিনে ধাতু কেনাও অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
ধনতেরাসের দিন অনেকে নতুন গহনা কিনে থাকেন। তবে ধনতেরাসের দিন কেন মানুষ সোনা কেনেন জানেন কি? এই দিনে সোনার কেনার পিছনে অনেকে ভিন্ন ধরণের কারণ বলে থাকে। তবে এই দিনে সোনা কেনার মূল কারণ হল প্রাচীন কালের রাজা হিমের ছেলের ভাগ্য লেখা ছিল বিয়ের চতুর্থ দিনে তার সাপের কামড়ে মৃত্যু হবে। তাই সে যখন বিয়ে করেন তার বিবাহিত স্ত্রী নিজের স্বামীকে বাঁচানোর জন্য তার সমস্ত অলংকার ঘরের দরজার সামনে স্তূপ করে রেখে দেন এবং দরজার সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখে দেন। যম যখন ঘরে প্রবেশ করে তখন সোনার ছটায় এবং প্রদীপের আলোর ছটায় চোখ ধাঁধিয়ে যায়। এই প্রথা অনুযায়ী ধনতেরাসের দিন নতুন সোনা কেনায় হয় এবং ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা হয়।
কথায় আছে এই দিন নতুন গহনা কিনলে মা লক্ষ্মী নিজে বাড়িতে প্রবেশ করেন এবং ধনসম্পদ বৃদ্ধি হয়। এর জন্যই সবাই ধনতেরাসের দিন নতুন সোনা কিনে থাকেন।
ধন্বন্তরী- কার্তিক কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীর দিন সমুদ্র মন্থনের মধ্য দিয়ে উপস্থিত হয়েছিল। ধন্বন্তরী যখন উপস্থিত হলেন, তখন তাঁর হাতে অমৃত পূর্ণ কলস ছিল। ভগবান ধন্বন্তরী এই কলস নিয়ে হাজির হয়েছিলেন, তাই এই দিনটিতে পাত্রগুলি কেনার হয়। বিশেষত পিতল এবং সিলভার কেনা উচিত,। কারণ পিতল হ’ল মহর্ষি ধন্বন্তরীর ধাতু। এটি বাড়িতে স্বাস্থ্য, সৌভাগ্য এবং স্বাস্থ্য সুবিধা নিয়ে আসে।
ধনতেরাসের দিন বাড়ির দক্ষিণ দিকে প্রদীপ জ্বালানো হয়। এর পিছনে একটি ইতিহাস রয়েছে। একদিন দূত যমরাজকে প্রশ্ন করেন হিমের ছেলের অকাল মৃত্যুর এড়ানোর কোনও উপায় আছে কিনা? এই প্রশ্নের উত্তরে যমদেব বলেন ধনতেরাসের সন্ধ্যায় যমের নামে দক্ষিণ দিকে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলে অকাল মৃত্যু হয় না। এই বিশ্বাস অনুসারেই ধনতেরাসের দিন সন্ধ্যাবেলায় বাড়ি দক্ষিণ দিকে যমের নামে প্রদীপ জ্বালান। যাতে তার পরিবার যমের হাত থেকে সুরক্ষা পান।
ধনতেরাসের দিন সোনার দোকান এবং বাড়িতে লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। পাশাপাশি গণেশ এবং কুবের পূজা করা হয়। সন্ধ্যাবেলা বাড়ির চারপাশে প্রদীপ জ্বালানো হয় এবং রঙ্গোলী দেওয়া হয়।
সন্ধ্যে থেকেই মানুষ সোনার দোকানে গিয়ে নতুন সোনা কেনেন এবং ধাতুর জিনিস ক্রয় করেন। সোনার দোকানে এই দিনে ধূমধাম করে পালিত হয়। কারণ এই দিনটি তাদের শ্রীবৃদ্ধির দিন। সোনার উপর চলে ছাড়। এইভাবেই চলে ধনতেরাস উদযাপন।
মূলত ধনতেরাস পূজা করা হয় সন্ধ্যেবেলা। পূজা স্থলে, উত্তর দিকে ভগবান কুবের এবং ধন্বন্তরী প্রতিমার পূজা করা উচিত। এর সাথে সাথে দেবী লক্ষ্মী এবং ভগবান শ্রীগনেশের পূজা করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান কুবেরের সাদা মিষ্টি দেওয়া উচিত, ধন্বন্তরীর হলুদ মিষ্টি দেওয়া উচিত। কারণ ধন্বন্তরী হলুদ জিনিস পছন্দ করেন।
I wish I could buy some bangles like those for my wife! I bought some pretty jeweled ones for her in Jaipur in January! Happy Diwali!